বেগম রোকেয়া
- এডিট ডেস্ক

- Dec 10, 2021
- 2 min read
Updated: Oct 10, 2022
বেগম রোকেয়া নামেই বিখ্যাত ছিলেন রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। তিনি ছিলেন একজন বাঙালি লেখক, কর্মী এবং বাংলার অগ্রগামী নারীবাদী পথ পদর্শক।

৯ ডিসেম্বর জন্ম ও মৃত্যুদিন নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার । নারীকে ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কারছন্ন শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাওয়া এ মহীয়সী নারীকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে জাতি। রংপুরের পায়রাবন্দে এক জমিদার পরিবারে রোকেয়ার জন্ম হয় ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বরে । তিনি পরিচিত ছিলেন রোকেয়া খাতুন, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, মিসেস আর এস হোসেন নামে । ঊনবিংশ শতকে হাজারো শৃঙ্খলতার জিঞ্জিরায় আবদ্ধ নারীদের পরাধীনতার বিরুদ্ধে তিনিই প্রথম আওয়াজ তুলেছেন।
বেগম রোকেয়ারা ছিলেন দুই ভাই ও দুই বোন। বাবা জহির উদ্দিন মুহম্মদ আবুল আলী হায়দার সাবের, মা রাহাতুন্নেছা চৌধুরানী। রোকেয়ার জানার ও শিক্ষার অদম্য আগ্রহ দেখে অগোচরে মোমের আলোয় বেগম রোকেয়া ও আরেক বোন করিমনুন্নেছাকে বর্ণ শিক্ষা দিতেন প্রগতিশীল মানুষ বড় ভাই ইবরাহিম সাবের।

১৮৮৯ সালে ১৬ বছর বয়সে বেগম রোকেয়ার বিয়ে হয় ভাগলপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট খান বাহাদূর সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে। তিনি পেলেন আরেক জন প্রগতিশীল মানুষের সাহচার্য। স্বামী সাখাওয়াত হোসেন বেগম রোকেয়ার লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ দেখে তাকে বাংলা ও ইংরেজী শিক্ষায় দিক্ষিত করার পাশাপাশি তাঁর লেখা-লেখিতে সাহায্য করতে লাগলেন।সাহিত্যের জগতে প্রবেশ করেন তিনি ১৯০২ সালে ‘পিপাসা’ নামে একটি বাংলা গল্প লিখে ।
আর ইংরেজীতে লিখলেন তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘সুলতানাস ড্রিমস’ ১৯০৫ সালে দ্য ইন্ডিয়ান লেডিস ম্যাগাজিনে । সাখাওয়াত হোসেন লেখাটি পড়ে অভিভূত হয়ে পড়েন এবং তাঁর উৎসাহে ১৯০৮ সালে সুলতানাস ড্রিমস বই আকারে প্রকাশিত হয়। এই বইটিকে বিশ্বের নারীবাদি সাহিত্যে একটি মাইল ফলক হিসেবে গণ্য করা হয়। তার অন্যান্য গ্রন্থগুলো হলো ‘অবরোধবাসিনী’, ‘মতিচুর’, ‘পদ্মরাগ’।

১৯০৯ সালে সাখাওয়াত হোসেন মৃত্যুবরণ করেন। প্রিয় মানুষটির মৃত্যুর পাঁচ মাস পর রোকেয়া সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল নামে একটি মেয়েদের স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন ভাগলপুরে।কিন্তু সম্পত্তি সংক্রান্ত ঝামেলার জন্য ১৯১০ সালে স্কুল বন্ধ করে কলকাতায় চলে যান তিনি এবং ১৯১১ সালের ১৫ মার্চ গার্লস স্কুলটি পুনরায় চালু করেন। প্রাথমিক অবস্থায় ছাত্রী ছিল মাত্র ৮ জন জন।
চার বছরের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৪-তে। ১৯৩০ সালেরমাঝে এটি হাইস্কুলে পরিণত হয়। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড স্কুল পরিচালনা ও সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নিজেকে সাংগঠনিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত রাখেন রোকেয়া। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া মৃত্যুবরণ করেন। দিনটি রোকেয়া দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। তাঁর কবর উত্তর কলকাতার সোদপুরে অবস্থিত যা পরবর্তীকালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক অমলেন্দু দে আবিষ্কার করেন ।প্রতি বছর রোকেয়া দিবস উপলক্ষে প্রকাশ করা হয় বিশেষ ক্রোড়পত্র, ওয়াল পেপার , পুস্তিকাও স্মারকগ্রন্থ। এবার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় দেশের পাঁচজন নারী পান ‘রোকেয়া পদক’।
এ বছর ২০২১ বেগম রোকেয়া পদক প্রাপ্তরা রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার কাছ থেকে সম্মাননা পদক গ্রহণ করেন।
শব্দঃ ৪০৫
ছবি ও তথ্য সংগ্রহঃ নেট , https://examtution.blogspot.com/2018/11/blog-post_12.html ,https://www.dailynayadiganta.com/last-page/628169/বেগম-রোকেয়া-দিবস-আজ , https://feminisminindia.com/2017/07/06/begum-rokeya-essay/

















Comments