বেণু ডাক্তার/ডা: বার্ণাড রোজারিও
- এডিট ডেস্ক
- Apr 29, 2022
- 2 min read
Updated: Jun 16, 2023

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নাগরী মিশনের নিকট ও দূরবর্তী হিন্দু লোকালয়ে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর অগ্নিসংযোগ, অত্যাচার ও গণহত্যার কারণে দলে দলে আশ্রয় নিতে থাকে নাগরী মিশন কেন্দ্রে । নাগরী মিশনের পাল-পুরোহিত আমেরিকান পাদরী Fr Edmund N Goedert csc. মিশন কেন্দ্র পরিচালিত এ আশ্রয় শিবিরে দিনে দিনে প্রায় ৪০,০০০ গৃহহীন উদ্বাস্তু এসে হাজির হয়। এ বিশাল শরণার্থীর আশ্রয় ও খাদ্য যোগানের পাশাপাশি প্রয়োজন হয়ে পড়ে চিকিৎসা সেবা। সেসময় এগিয়ে আসেন নাগরীর ডা: বার্ণাড রোজারিও (বেণু ডাক্তার)। তাঁর সাহায্যকারী হিসেবে ছিলেন মিশনের মেডিকেল সেন্টারের দায়িত্ব প্রাপ্ত মিশনারী সিষ্টারবৃন্দ। তাঁরা উদ্বাস্তু দুর্গত জনগোষ্ঠির চিকিৎসা সেবা যেমন দিতেন তেমনি করে গোপনে চিকিৎসা দিতেন মুক্তিযোদ্ধাদের। জুলাই মাসের ২৫ তারিখে একদল মুক্তিযোদ্ধা দড়িপাড়া গ্রাম সংলগ্ন নলছাটা রেলওয়ে ব্রিজ চলন্ত ট্রেনসহ উডিয়ে দেয়। আহতদের চিকিৎসার জন্যে ডা: বার্ণাড ও ফা: গেডার্ট সাদা পতাকা উডিয়ে নৌকাযোগে ঘটনাস্থলে অগ্রসর হওয়া কালে পাক বাহিনী গুলি ছুডলে তাঁরা পানিতে ঝাপ দিয়ে প্রাণে বেঁচে যান। সপ্তাহ খানেক পরে পাকা বাহিনী নাগরী মিশনে এসে

বাণার্ট ও তাঁর স্ত্রী লীনা রোজারিও’কে খুঁজলে ফা: গেডার্ট সিএসসি সে রাতেই ডা: বার্ণাড ও লীনাকে নাগরী ছেড়ে দেশান্তর যাবার উপদেশ দেন। সে রাতেই তাঁরা সপরিবারে আগড়তলা অভিমুখে রওনা দেন। পেছনে পড়ে থাকে নাগরী স্কুলের মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসা কেন্দ্র,বাগদী স্কুলের মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসা কেন্দ্র, ভাসানিয়া গ্রামের আনারস বাগানের মাঝে লুকানো মোমবাতি হারিকেন জ্বালানো সার্বক্ষণিক চিকিৎসাকেন্দ্র।
ডা: বার্ণাড রোজারিও পরিবারসহ উদ্বাস্ত হয়ে বহু খড়কুট পেড়িয়ে ত্রিপুরা পৌছান। সেখানকার মরিয়মনগর মিশনের পাল-পুরোহিত কানাডিয়ান ফা: জর্জ লেকসেয়ার তাঁদেরকে মিশনে স্থান দেন। ফা: ডাক্তার পরিচয় জেনে ডা: বার্ণাড রোজারিও কে ‘৮২ মাইল শরণার্থী শিবির’ এ চিকিৎসা সেবার জন্যে পাঠিয়ে দেন। আগরতলার ‘কান্চনছড়া’ পাহাড়ী গ্রামে থাকার ব্যবস্থা করে ডা: বার্ণাডকে শরণার্থী শিবিবের দায়িত্ব দেয়া হল। CARITAS, India এর পক্ষে ফা: জর্জ লেকলেয়ার এবং সরকারের পক্ষে মেজর মাইকেল সেখানকার শরণার্থী শিবির গুলো পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন দিল্লীর কম্বাইনড মিলিটারী হাসপাতালের প্রধান মেজর জগমোহন সিং। ডা: বার্ণাডের উপর ন্যাস্ত ছিল শিবিরের স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপণা।সব কাজ শেষে ১৯৭২ এর ১০ই মার্চ ডা: বার্ণাড রোজারিও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
পরবর্তীতে তিনি জয়দেবপুরে প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু করেন এবং সপরিবারে সেখানেই বসবাস করেন।

শব্দঃ ৩২৪
লেখা ও ছবিঃ Neville D Rozario ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত
Comments