top of page

অতুল প্রসাদ সেন-২

Updated: Sep 24, 2022

জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফল্যের শিখরে পৌছাতে পারলেও শৈশবে পিতৃহীন অতুলপ্রসাদ জয় করতে পারেননি সাংসারিক জীবনের দুঃখ কষ্টগুলো। সারাজীবনের বিষাদ বেদনাই ছিল তাঁর অপুর্বসৃস্ট গানগুলির মূল আধার ।
 
লখনউ এ নবাবী সাজে অতুল প্রসাদ
লখনউ এ নবাবী সাজে অতুল প্রসাদ
স্ত্রী হেমাকুসুম ও ছেলে দিলিপ কুমার
স্ত্রী হেমাকুসুম ও ছেলে দিলিপ কুমার

১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দে ব্যারিস্টারী ডিগ্রী লাভের উদ্দেশ্য নিয়ে আইন পড়তে অতুলপ্রসাদ লণ্ডনে যান। কিছুদিন পর বড়মামা সেখানে গেলে মামাতো বোন হেমকুসুমের সঙ্গে প্রেম হয় এবং তাঁকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন অতুলপ্রসাদ। কিন্তু ভারতবর্ষের আইনে ভাই-বোনে এমন বিয়ে গ্রহণযোগ্য ছিল না সে সময়। আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মত অবস্থা , পরিবারের সবাই তীব্র আপত্তি তুলেন । অতুলপ্রসাদ কিন্তু তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন । আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার অতুলপ্রসাদ তার সিনিয়র সত্যেন্দ্রপ্রসন্ন সিংহের পরামর্শ নেন এবং স্কটল্যান্ড গমন করেন, যেখানে এমন বিবাহ আইনত বৈধ ছিল। স্কটল্যান্ডে গিয়ে ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে মামাতো বোন হেমকুসুমকে বিয়ে করেন। পসার জমাতে পারছিলেন না বিলেতে, বিয়ের প্রথম দুই বছরেই পড়েন চরম অর্থকস্টে । দুটি পুত্র সন্তানের মধ্যে একজনকে হারান অকালে । শেষমেষ ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে পুত্র দিলিপ কুমারকে নিযে ভারতে প্রত্যাবর্তন করেন প্রথমে রংপুরকলকাতায় অনুশীলন শুরু করেন । পরবর্তীকালে লখনউ চলে যান এবং সেখানে একজন শ্রেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন, বার অ্যাসোসিয়েশন ও বার কাউন্সিলের সভাপতি নির্বাচিত হন। লখনউ নগরীর সংস্কৃতি ও জীবনধারার সঙ্গেও তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত হয়ে পড়েন। জীবনকালেই সেখানে রাস্তার নামকরণ করা হয় তাঁর নামে । সেই যুগে ৩৩ হাজার টাকা দিয়ে লখনউয়ের কেশরবাগে বিরাট বাড়ি করেছিলেন অতুলপ্রসাদ। কিন্তু এত কিছুর পরও সেই অসম বিয়ের কারনে কোন আত্মীয়-স্বজন তাদের সাথে সম্পর্ক রাখেনি এবং এ বিয়ে শেষাবধি সুখের হয় নি।

লখনউ এ অতুল প্রসাদের বাড়ি
লখনউ এ অতুল প্রসাদের বাড়ি

অতুলপ্রসাদের মা হেমন্তশশীর দ্বিতীয় স্বামী দুর্গামোহনের মৃত্যুর পর তিনি চলে আসেন পুত্রের সংসারে। এসময় শ্বাশুড়ি বৌমার বিসম্বাদ শুরু হয়। পরিণতিতে স্বামী-স্ত্রীর ছাড়াছাড়ি। ছাড়াছাড়ি মিটিয়ে একসঙ্গে থাকার চেষ্টাও সফল হয়নি। শেষ করা যায়নি শাশুড়ির সঙ্গে হেমকুসুমের দ্বন্দ্ব, বরং হেমন্তশশীর মৃত্যুর পর ঘর থেকে তাঁর ছবিটি সরিয়ে ফেলার দাবী তোলেন হেমকুসুম । মায়ের ছবিকে এভাবে অসম্মান করতে নারাজ অতুলপ্রসাদ কর্নপাত করেননি, ফলশ্রুতিতে এবার হেমকুসুম চিরকালের জন্য স্বামীর ঘর ছেড়ে গেলেন, আর প্রত্যাবর্তন করেননি।

 

শব্দঃ ২৯৮

ছবি ও তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া , আনন্দবাজার পত্রিকা,(https://www.anandabazar.com/supplementary/patrika/some-unknown-stories-about-bengali-composer-lyricist-and-singer-atul-prasad-sen-1.761233 )

 

Comments


bottom of page