অতুল প্রসাদ সেন-১
- এডিট ডেস্ক
- Dec 25, 2019
- 2 min read
Updated: Jun 4, 2023
অতুল প্রসাদ সেন প্রথম বাংলায় গজল রচনা করেন । বাংলা সঙ্গীতের প্রধান পাঁচজন স্থপতির একজন বলা হয় তাকে। বাংলা গানে ঠুংরি ধারার প্রবর্তকও তিনি। একজন সঙ্গীতজ্ঞ ও সুরকার হিসেবেই তিনি পরিচিত।

‘মোদের গরব, মোদের আশা,
আ মরি বাংলা ভাষা!
তোমার কোলে, তোমার বোলে,
কতই শান্তি ভালবাসা!’
ছোটবেলায় এই বাংলা পাঠ্যবইয়ে এই কবিতা পড়েননি এমন কেউ নেই। এমনই অনেক মধুর গীতিকাব্যের রচয়িতা অতুল প্রসাদ সেন । ১৮৭১ সালে ২০ অক্টোবার অতুল প্রসাদের জন্ম হয় ঢাকায় তার নানাবাড়িতে। তার আদি নিবাস শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মগর গ্রামে। খুব অল্প বয়সেই বাবাকে হারিয়ে অতুল প্রসাদ নানা কালীনারায়ণ গুপ্তের কাছে বড় হন। নানার কাছেই সঙ্গীত ও ভক্তিমূলক গানে তার হাতেখড়ি।
১৮৯০ সালে প্রবেশিকা পাশের পর অতুল প্রসাদ কিছুদিন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশোনা করেন। পড়ে লন্ডনে গিয়ে আইন-বিষয়ক পড়াশোনাও করে ব্যারিস্টারী পাশ করে রংপুর শহর ও কলকাতায় কর্মজীবন শুরু করেন ।
বাংলা ভাষা সাহিত্যে ও সঙ্গীতের এক অতি পরিচিত নাম অতুল প্রসাদ সেন ছিলেন একাধারে কবি, গীতিকার ও গায়ক। তবে বাংলাভাষীদের কাছে অতুল প্রসাদ সেন মূলত একজন সঙ্গীতজ্ঞ ও সুরকার হিসেবেই পরিচিত। ব্রিটিশ ভারবর্ষে ঊনবিংশ শতাব্দীতে একজন বিশিষ্ট বাঙালি গীতিকার, সুরকার ও গায়ক হিসেবে তিনি সুনাম অর্জন করেন। স্বদেশি সঙ্গীত, ভক্তিগীতি ও প্রেমের গান মূলত এই তিন ধারায় বিভক্ত অতুল প্রসাদ সেনের গানগুলি । তবে তার ব্যক্তি জীবনের মর্মপীড়া কম-বেশিপ্রভাব ফেলেছে সকল ধরনের গানে । এজন্যই তার অধিকাংশ গান হয়ে উঠেছে করুণ-রস প্রধান। উনিশের শেষ থেকে বিশ শতকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত যারা রবিন্দ্র প্রতিভার প্রভাববলয়ের মধ্যে থেকেও সগর্বে পদচারনা করে বাংলা কাব্যগীতি রচনায় নিজ বিশেষত্ব প্রকাশ করতে সক্ষম হন, অতুল প্রসাদ ছিলেন তাদের অন্যতম।
সমসাময়িক গীতিকারদের তুলনায়তার সঙ্গীতের সংখ্যা সীমিত হলেও অতুল প্রসাদের অনেক গানে সাঙ্গীতের আদিত্ব বা নূতনত্ব স্পষ্টতই দৃশ্যমান । আর সেকারণেই তিনি বাংলা সঙ্গীত জগতে এক স্বশাসিত আসন লাভ করেছেন। তাঁর গানগুলি অতুল প্রসাদের গান নামে বিশেষ ভাবে প্রতিষ্ঠিত। তিনিই প্রথম বাংলায় গজল রচনা করেন।তার গানগুলি অতুল প্রসাদের গান নামে বিশেষ ভাবে প্রতিষ্ঠিত।তিনিই প্রথম বাংলায় গজল রচনা করেন। তাঁকে বাংলা সঙ্গীতের প্রধান পাঁচজন স্থপতির একজন বলা হয় । তিনিই বাংলা গানে ঠুংরি ধারার পথপ্রদর্শক ।

মাত্র ২০৬টি গান করেছেন তিনি যার মধ্যে ৫০-৬০টি গান গীত হিসেবে প্রাধান্য পায়। প্রবাসী (বর্তমান নিখিল-ভারত) বঙ্গ-সাহিত্য সম্মেলন প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন অতুল প্রসাদ। রাজনীতিতে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ না করলেও প্রথমে কংগ্রেসের সমর্থক ছিলেন, পরে লিবারেলপন্থী হন। অতুলপ্রসাদ তার সমগ্র জীবনের উপার্জিত অর্থেরও বৃহৎ অংশ স্থানীয় জনকল্যাণে ব্যয় করেন। এমনকি তিনি তার বাসগৃহ ও গ্রন্থস্বত্বও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে দান করে যান। ২৬ আগস্ট, ১৯৩৪ সালে তিনি মারা যান । তিরোধানের পর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় কাওরাইদ ব্রহ্ম মন্দিরের পাশে সমাহিত করা হয়।
শব্দঃ ৩৭২
ছবি ও লেখাঃ সংগ্রহ লিঙ্কঃ https://bangla.dhakatribune.com/bangladesh/2018/10/20/4001/আজ-অতুল-প্রসাদ-সেনের-১৪৭তম-জন্মবার্ষিকী/ গ্রন্থঃগাজীপুরের ইতিহাস
Comments